কুরবানির চামড়ার ন্যায্য মূল্য না পেলেও কওমী মাদ্রাসা পেয়েছে মুসলমানদের ভালবাসা
মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান
-----------------------------------------------------------
একসময় যারা কওমী মাদ্রাসাকে অপছন্দ করে বলতো যে, মাদ্রাসার ছাত্ররা মানুষের বাড়ী বাড়ী ঘুরে কুরবানীর চামড়া ভিক্ষা করে, আজ তারাই এখন খুঁজে খুঁজে মাদ্রাসায় কুরবানির চামড়া দিয়ে যাচ্ছে। শত চেষ্টা করে মাদ্রাসার কোন দায়িত্বশীলদের একজনের মোবাইল নাম্বার নিয়ে ফোন করে বলছে হুজুর! আমার বাড়ী ও আশেপাশের বাড়ীগুলোতে প্রায় এতো এতো চামড়া আছে, দয়া করে যদি কাউকে পাঠাতেন? না হয় আমি ই নিয়ে আসি?
এ হচ্ছে এবছর কোরবানীর পশুর চামড়ার অবস্থা।
এই চিত্র দেখে আমার যা উপলব্ধি হয়েছে তা হলো
★ ষড়যন্ত্রকারীরা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে মাদ্রাসায় যেন চামড়ার টাকা না পায়, যেনো মাদ্রাসা গুলো বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু আল্লাহ হেকমত পুরোটা ই তাদের উল্টো। তা হচ্ছে, যদিও চামড়ার মূল্য নেই, কিন্তু এই চামড়ার মাধ্যমে ই কওমী মাদ্রাসার সাথে মানুষের সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি করা নিবিড় করা। তাই মানুষ নিজ ইচ্ছায় নিজেরা এসে চামড়া দিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছে সহানুভূতি ও প্রদর্শন করে যাচ্ছে। চামড়া দিতে পেরে যেনো তারা মহা খুশি।
★ দ্বিতীয় উপলব্ধি হয়েছে যা, তা হলো
এবছরে চামড়ার ন্যায্যমূল্য না পেয়ে মানুষ আগ্রহ ও দরদ মাখা দিল নিয়ে মাদ্রাসায় চামড়া দিয়ে গেছে, ঠিক যদি কওমী মাদ্রাসাগুলো একমত হয়ে হিম্মত করে যে, আর কারো বাড়ীতে আমরা চামড়ার জন্য যাবো না, তাহলে মানুষ স্বইচ্ছায় মাদ্রাসায় এসে চামড়া দিয়ে যাবে।
সেই দেওয়াটা চাই সওয়াবের জন্য হোক অথবা নিজ বাড়ীকে কোরবানির পশুর বর্জ্য থেকে পরিস্কার রাখার জন্যই হোক।
অনেকেই মাদ্রাসা গুলোকে ট্যানারি করার প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছে যা সত্যিই প্রয়োজনীয় প্রস্তাব। কিন্তু ট্যানারি করে আপনি যতই বাজারজাত করার পক্রিয়া করেন না কেন ঐ ষড়যন্ত্রকারীরা তখন বানিজ্য মন্ত্রণালয় কিংবা ট্যানারি মালিক সমিতির মাধ্যমে ই প্রমাণ করবে যে আপনার এই চামড়ার বাজারজাত করণের পক্রিয়ায় গলদ রয়েছে যা বাজারজাত করণের মাধ্যমে বাংলাদেশের চামড়া শিল্প ধংষ হয়ে যাবে। যেমন দেশের কোন পণ্য আমদানি রপ্তানিতে বি এস টি কিংবা বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা অধিদপ্তরের অনুমতি না মিললে বাজারজাত করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধে লাইসেন্স পরযন্ত বাতিল করে দেয়। হয়তো তেমন ভাবেই একসময় এই ট্যানারির এ অবস্থা হতে পারে, যেহেতু ষড়যন্ত্রকারীরা তো আপনাকে সফল হতে দিবেনা।
অতএব ভেবে চিনতে পা ফেলা উচিত।
প্রতিবাদ শুধু একভাবেই হতে পারে আর তা হলো শুধুমাত্র একটা হিম্মত যে, আমরা কওমী মাদ্রাসার কেউ আর কোরবানির সময় মানুষের বাড়ী বাড়ী ঘুরে
চামড়া কালেকশন করবো না।
কওমী মাদ্রাসা গুলো কুরবানির চামড়ার ন্যায্য মূল্য না পেলেও পেয়েছে সাধারণ মানুষদের ভালবাসা আর সহানুভূতি।
যা-কিছু ই লিখেছি তা একান্তই শুধুমাত্র আমার উপলব্ধি থেকে লিখেছি মাত্র। জ্ঞানের সল্পতায় এই উপলব্ধি ত্রুটিপূর্ণ হওয়া ই স্বাভাবিক।
মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান
যুগ্ম সম্পাদক
ইসলামী ঐক্যজোট
ব্রাক্ষণবাড়ীয়া জেলা

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন